বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল মসজিদ মিশন কমপ্লেক্স-এ মিশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা মুহিউদ্দীন খান বলেন-আজ আমাদের মাঝে রাসূলের আদর্শ ও রোজার শিক্ষা না থাকার কারণে বর্তমানে সমাজে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, দুর্নীতি সহ নানা অপরাধ মূলক কর্মকান্ড সংঘটিত হচ্ছে। ইসলামী শিক্ষা ও ইসলামের সঠিক ধারনার অভাবে ইসলামী ব্যক্তিত্বদেরকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে শাস্তি দেয়া হচ্ছে। মানবতা বিরোধীর ধুঁয়া তুলে শীর্ষ ইসলামী নেতৃবৃন্দের সাথে অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে। রোজা আমাদেরকে সৎ, আদর্শ মানুষ রুপে গড়ে তোলে। দেশ আজ এক ভয়ংকর সময় পার করছে। দেশের আলেম সমাজ সরকারের রোষানলে পড়েছে। যেভাবে দেশে আযাব ডেকে আনা হচ্ছে তাতে করে কখন আল্লাহর গজব আমাদের উপর নাযিল হয় একথা ভেবে আলেম সমাজ ভীত সন্ত্রস্ত্র হয়ে পড়েছে। ফেরাউনের নির্যাতন থেকে বাঁচতে মুসা (আঃ) যেমন আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করেছিলেন। মুসা (আঃ) এর দোয়া কবুল করে আল্লাহ ফেরাউনকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। বর্তমান সরকারের নির্যাতন থেকে বাঁচতে গোটা আলেম সমাজকে মুসা (আঃ) এর মতো আল্লাহর দরবারে চোখের পানি ফেলে ফরিয়াদ করতে হবে। রোজা পালন করেও যদি কেউ সেই শিক্ষা কাজে লাগাতে না পারে তাহলে তার রোজা আল্লাহর কাছে গ্রহণ যোগ্য নয়।
বিচারপতি আব্দুর রউফ বলেন- সিয়াম সাধনা মুমিনের শরীর ও মনকে পবিত্র করে সমাজকে সুষ্ঠ সুন্দরভাবে পরিচালনা করা যোগ্য রুপে গড়ে তোলে।
আহমাদুল্লাহ আশরাফ বলেন- এদেশে গন্ত্রতের দোহাই দিয়ে সব ধরনের অপর্কম করা হচ্ছে। ইসি সাখাওয়াত পতিতাদের স্বীকৃতি দিয়েছেন। এদেশে কুরআন নিয়েও চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন অধিকার দিয়েছে তাদের সংসদে যাওয়ার। এদেরকে বরখাস্ত করা উচিত। আমরা যেন দ্বীনের হেফাজত করতে পারি সে জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
আবু তাহের জিহাদী- রোজার মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া সম্ভব।
ড. আবু ইউসুফ খান- রমাজানের শিক্ষার মাধ্যমে বাকী ১১ মাস চলার শক্তি অর্জন করতে হবে।
ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান মিরান- বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমরা রমজানের শিক্ষা নিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে পারি তার চেষ্টা করতে হবে।
আলমগীর মুজুমদার- ইসলাম সবাইকে আপন করে নেয়। কিন্তু দুর্ভাগ্য আজকে দেশকে বিভাজনের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আলেম সমাজ ঐক্যবদ্ধ হন আমরাও আপানাদের সাথে আছি।
মাওঃ জাফরুল্লাহ খান, এদেশ মুসলমানের দেশ। এদেশ আলেম ওলামা মাশায়েখদের দেশ। রোজার সময় খাবার দোকান খোলা থাকে সরকার কি কিছুই করতে পারে না। নির্বাচন কমিশন কান্ড জ্ঞাণ থাকলে এই ধরনের কথা বলতে পারে না। কমিশনের কথার নিন্দা জানাই। অবিলম্বে তাদের পদত্যাগ করতে হবে।
মমতাজ চৌধুরী- এদেশে ইসলাম বিরোধী কোন আইন আমরা মেনে নেবো না। রোজা থেকে শিক্ষা নিয়ে সকল কিছুর মোকাবেলা করতে হবে।
কামরুল আহসান নেছারী- বাংলাদেশের মানুষের ঈমান আকীদার উপর আঘাত অচিরেই আসবে বলে মনে হয়। মসজিদ মিশন যে ভূমিকা পালন করছে তা প্রশংসনিয়।
আব্দুল গনী নাসেরী- আজকে মসুলমান ও হক্কানী আলেমদের আহবান জানাই আপনারা ঐক্যবদ্ধ হউন। মুসলমানদের নির্যাতিত নিপিড়িত দিনে ঐক্যবব্ধ হয়ে মোকাবেলা করুন।
আবুল খায়ের- আজকে মুসলমানদের অস্তীত্বের সংকট। সরকারের প্রতি নিবেদন কিভাবে ইন্দোনেশিয়ায় বিপ্লব হয়েছিল সে বিষয়ে চিন্তুা করুন। কুরআন ও আল্লাহ বিশ্বাসী সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অস্তীত্বের সংকটের মোকাবেলা করতে হবে।
আব্দুল লতিফ নেজামী- পবিত্র রমাজন মাসে ইসলামের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার জন্য রমজানের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে হবে।
মাওলানা মুহাম্মাদ ইসহাক বলেন- আমাদেরকে ছোট খাটো মত পার্থক্য ভুলে ইসলাম বিরোধী শক্তির মোকাবিলায় ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
শফিউল আলম প্রধান বলেন- দেশে আজকে গণতন্ত্রের নামে অরাজক পরিস্থিতি বিরজমান। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব মারাত্মক হুমকির সম্মুখিন। ইসলাম, ইসলামী নেতৃবৃন্দকে নিয়ে নানা মুখী চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র চলছে। এর উত্তরনের জন্য ইসলামী ও জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলে বাস্তবমুখী কর্মসূচী নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-মাওঃ আতাউল্লাহ সহ-সভাপতি বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, মাওলানা জাফরুল্লাহ খান মহাসচিব বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী মহাসচিব ইসলামী ঐক্যজোট, মসজিদ মিশনের সহ-সভাপতি মাওঃ মুফাজ্জল হোসাইন খান, জেনারেল সেক্রেটারী ড. মাওলানা খলিলুর রহমান, জয়েন্ট সেক্রেটারী মাওলানা আহমাদুল্লাহ, শাহ আরিফ বিল্লাহ সিদ্দিকী সভাপতি হক্কানী পীর মাশায়েখ, মাওঃ কামরুল হাসান সাঈদ আনসারী পীর সাহেব টেকেরহাট, মাওলানা আবুল বাশার পীরসাহেব শাহতলী, আব্দুল আহাদ নুর সভাপতি ইসলামী পরিষদ, এড. আব্দুল মোবিন প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টি, এড. নুরুল হক মজুমদার প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, আলমগীর মুজমদার মহাসচিব আগ্রাসন প্রতিরোধ জাতীয় কমিটি, কাজী আবুল খায়ের, মাওঃ কে.এম আব্দুস সোবহান, মাওঃ আবু হানিফ নেছারী, অধ্যক্ষ মাওঃ মোশাররফ হোসাইন প্রমূখ।
সভাপতির বক্তব্যে মসজিদ মিশনের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীন বলেন- মসজিদ কেন্দ্রীক সমাজ গড়ে তুলতে পারলে দেশে প্রকৃত শান্তি ফিরে আসবে। কুরআন থেকে সরে আসার কারণে মুসলমানরা আজ নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। দুনিয়াতে শান্তি, আখিরাতে মুক্তি পেতে হলে মসজিদ ভিত্তিক সমাজ নির্মাণের বিকল্প নেই। ইসলামী শিক্ষা ও মূল্যবোধেই সমাজ থেকে সকল দুর্ণীতি দুর করতে পারে।